“অটিস্টিক শিশুদের সাথে যোগাযোগের কৌশল”
1. মৌখিক ও অমৌখিক যোগাযোগে সমস্যা
2. সামাজিকতার সমস্যা
3. সীমাবদ্ধ বা পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ ও আগ্রহ
এছাড়াও অটিস্টিক শিশুদের ভিতর রয়েছে পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের সমস্যা। এই পাঁচটি ইন্দ্রিয়েই অটিস্টিক শিশুরা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশী কিংবা কম সংবেদনশীল থাকে। এই সমস্যাগুলি সনাক্ত করতে পারলে তাদের সাথে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সহজ হয়। অভিভাবকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অটিস্টিক শিশুর কথা বলার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন( শিশুটি হয়তো কোন শব্দ বলা শেখেনি) কিন্ত বাস্তবে যোগাযোগ করাটা কথার চাইতে বেশী শক্তিশালী এবং এর মাধ্যমেই তার আবেগ, অনুভূতির প্রকাশ ঘটায়।
অভিভাবকে প্রথমেই জানতে হবে সে (আপনার শিশু) কি কি পছন্দ করে, তাহলেই অভিভাবক জানতে সক্ষম হবে কোন কোন জিনিষ তাকে যোগাযোগ করতে উদ্দীপনা যোগাতে পারে। যেমনঃ
কোন খেলনা দিয়ে সে খেলতে বেশী পছন্দ করে?
তার পছন্দের খাবার কি?
সে কি ধরনের খেলা পছন্দ করে?
বেশীর ভাগ সময় সে কিভাবে থাকতে পছন্দ করে? ইত্যাদি।
এছাড়াও প্রসাব পায়খানার পূর্বে তার শারীরিক অঙ্গভঙ্গি কেমন থাকে ইত্যাদি
এছাড়া অটিস্টিক শিশুদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের যে সমস্যা রয়েছে তা সনাক্ত করার মাধ্যমেও তার যোগাযোগের উপায়গুলো/মাধ্যমগুলো বোঝা যায়।
অটিস্টিক শিশুর সাথে কিভাবে যোগাযোগ করবেন?
অটিস্টিক শিশুর সাথে যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ও সর্বপ্রথম কৌশল তা হল প্রথমে শিশুটির সাথে সুন্দর এক সম্পর্ক তৈরী করা। তার সাথে শিশু সুলভ আচরণ করা। নিজেকে শিক্ষক বা অভিভাবক না ভেবে তার মত কল্পনা করে তার সাথে খেলা করা । এর ফলে অতিদ্রতই তার যোগাযোগের পথ গুলো খুঁজে বের করতে সক্ষম হবেন।
যোগাযোগের সময় শিশুটি কিভাবে শিখতে পছন্দ করে সেটা গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য করতে হবে।অটিস্টিক শিশুর সাথে যোগাযোগের জন্য তিনটি জিনিষ দরকারঃ-
শিশুটি কেন? যোগাযোগ করবে।
শিশুটি কিভাবে? যোগাযোগ করবে।
শিশুটি কার সাথে? যোগাযোগ করবে।
অটিস্টিক শিশুরা এক বা একাধিক পদ্ধতিতে যোগাযোগ করে তার আবেগ, অনুভূতি, প্রয়োজনগুলো অন্যকে বোঝাতে চেষ্টা করে । তার মধ্যে কমন কতকগুলো বিষয় হলঃ
কান্না করে বা চিৎকার করে
পছন্দের মানুষ বা জিনিষের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়।
মুখোভঙ্গি বা অঙ্গভঙ্গি করে।
হাত দিয়ে পছন্দের জিনিষটি ধরে।
তার পছন্দের জিনিষের কাছে হাত ধরে নিয়ে যায়।
পছন্দের/দরকারের জিনিষের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
পছন্দের/দরকারী জিনিষটি আঙ্গুঁল দিয়ে দেখায়।
সে প্রথমে তার পছন্দের/দরকারী জিনিষের দিকে তাকায় আবার আপনার দিকে তাকায়।
ছবি দিয়ে যোগাযোগ করে।
বিভিন্ন অর্থহীন শব্দ করে যোগাযোগ করে।
অর্থহীন শব্দ করে যোগাযোগ করে।
অর্থপূর্ণ শব্দ/বাক্য বলে।
কথার প্রতিধ্বনি করে
যে সমস্ত অভিভাবক তার শিশুর মধ্যে অটিজমের লক্ষণগুলো দেখতে পেয়েছে তাদের উচিৎ তাদের সাথে শিশু সুলভ আচরণ করে তার সাথে র্যাপো তৈরি করে, তার যোগাযোগের কৌশলগুলো জেনে তার আবেগ, অনুভূতি, প্রয়োজনগুলো খুঁজে বের করা । তা হলেই অভিভাবক হিসেবে আপনি হবেন উত্তম শিক্ষক। আর এই প্রচেষ্টা আপনার শিশুর স্বাভাবিক জীবন যাপনে সহায়ক ভূমিকা হিসেবে কাজ করবে।
মফিজুল ইসলাম
Email:mofijul77@gmail.com, rislam_26@yahoo.com,
Comments
Post a Comment